জেনে নিন বিশ্বের যে ১২ টি দেশ শ্রীলঙ্কার মত দেউলিয়া হয়ে যেতে পারে | |
জেনে নিন বিশ্বের যে ১২ টি দেশ শ্রীলঙ্কার মত দেউলিয়া হয়ে যেতে পারে | |
![]() |
Srilanka Crisis |
ক্রমবর্ধমান ঋণ এবং মুদ্রাস্ফীতিতে
জর্জরিত প্রায় ডজন খানেক দেশ। যাদের পরিনতি অদূর ভবিষ্যতে শ্রীলঙ্কার মত হতে পারে
বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে
বার্তা সংস্থা
রয়টার্স । অর্থনীতি বিশেষজ্ঞদের
গবেষণার ভিত্তিতে করা ওই প্রতিবেদনে অন্তর্ভুক্ত
ঝুকিপূর্ণ ডজনখানেক দেশগুলোকে রাখার হয়েছে ডেনজার জোনের আওতায় রাখা হয়েছে। আমাদের
দক্ষিণ
এশিয়ার
দেশ
পাকিস্তানও
রয়েছে
এই
তালিকাতে।
আমরা
কম বেশি সবাই শ্রীলঙ্কার বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে জ্ঞান রাখি। নজিরবিহীন অর্থনৈতিক সংকটে ভুগছে দক্ষিণ এশিয়ার দেশ শ্রীলঙ্কা। শ্রীলঙ্কা বর্তমানে বেশ অর্থনৈতিক সংকটে ভুগছে। কোনো দেশের অর্থনীতির মেরুদন্ড ভেঙে গেলে দেশটির কি অবস্থা হতে
পারে সেটা শ্রীলঙ্কাকে দেখলেই আমরা বুঝতে পারি। সংকট এমন পর্যায় পৌছিয়েছে যে দেশটিতে খবার
নেই,জ্বালানি নেই,পরীক্ষা দেওয়ার জন্য আসবাবপত্র নেই চারিদিকে শুধু হাহাকর। দেশটিতে নেই পর্যাপ্ত পরিমাণ রিজার্ভ কারেন্সি যার প্রভাবে এই দেশটি এখন
নিত্য নতুন দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় দ্রব্যও ক্রয় করতে পারছে না। দেশটিতে বর্তমানে মুদ্রাস্ফীতি চলমান। তীব্র এই অর্থনৈতি সংকট
এবং শ্রীলঙ্কার রাজনৈতিক অস্থিরতার জন্য গোটা বিশ্বের কাছে শ্রীলঙ্কা একটি উদাহরণ হয়ে থাকবে। আর এরই ধারাবাহিকতায়
বিশ্বের আরো বেশ কয়েকটি মানে ডজনখানেক দেশ রয়েছে দেউলিয়া হয়ে যাওয়ার ঝুঁকিতে। যেইসকল দেশগুলোও অদূর ভবিষ্যতে হয়ে যেতে পারে শ্রীলঙ্কা। আর এই সকল
দেশগুলো বর্তমানে অর্থনৈতিক সংকটে অলরেডি পৌঁছে গেছে। বিখ্যাত অর্থনীতিবিদদের গবেষণার ভিত্তিতে দেউলিয়া হয়ে যেতে পারে ১২ টি দেশ
এই প্রতিবেদনটি প্রকাশ করে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। এই প্রতিবেদনে মূলত
বার্তা সংস্থাটি বিপর্যয়ের খাদের কিনারায় থাকা দেশগুলোকে চিন্হিত করে তদের অর্থনৈতিক সংকট বা দূরাবস্থা সামনে
তুলে এনেছেন। এই দেশসমূহের বৈদেশিক
ঋণ ও মুদ্রাস্ফীতি এমন
পর্যায় পৌছেসে যা নিকট ভবিষ্যতে
দেশগুলো অর্থনৈতিক সংকটে ভুগবে তারই ইঙ্গিত দিচ্ছে।
আর্জেন্টিনাঃ
আর্জেন্টিনা হলো দক্ষিণ আমেরিকার একটি জনপ্রিয় দেশ। যে দেশটি ফুটবল
খেলার জন্য বিখ্যাত। ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোর মধ্য সবার শীর্ষে অবস্থান করছে আর্জেন্টিনা। ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ঋণগ্রস্ত দেশ হলো আর্জেন্টিনা। এই দেশটিকে ১৫
হাজার কোটি মার্কিন ডলার ঋণ পরিশোধ করতে
হবে। তাই বলাই যায় অদূর ভবিষ্যতে আর্জেন্টিনাও দেউলিয়া হয়ে যেতে পারে।
ইউক্রেনঃ
তালিকায় আর্জেন্টিনার পরেই হলো ইউক্রেনের অবস্থান। ইউক্রেন হলো ইউরোপের একটি দেশ। বর্তমানে দেশটির সাথে রাশিয়া যুদ্ধতে লিপ্ত। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটি অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে এটা আন্দাজ করাই যায়। যুদ্ধবিধ্বস্থ এই দেশটিকে রাশিয়া
আগ্রাসনের ২০ বিলিয়ন মার্কিন
ডলারের বেশ ঋণ গ্রহণ করতে
হবে যা সত্যিই ইউক্রেনের
ভবিষ্যতে অর্থনৈতিক সংকট ডেকে আনবে।
তিউনিসিয়াঃ
তিউনিসিয়া হলো আফ্রিকা মহাদেশের একটি দেশ। এই দেশটি আফ্রিকা মহাদেশের দেশগুলোর ভিতরে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে। কারণ এই দেশটি বাজেটে
প্রতি বছর ঘাটতি থাকে প্রায় ১০ শতাংশ। আফ্রিকা
মহাদেশের IMF এর ঝুঁকিপূর্ণ তালিকায়
সবার উপরে অবস্থান তিউনিসিয়ার।
ঘানাঃ
ঘানাও হলো আফ্রিকামহাদেশেরই আরেকটি দেশ। এই দেশটিও ফুটবলের
জন্য অনেক বিখ্যাত। এমনকি প্রতিটা বিশ্বকাপে নিয়মিত অংশগ্রহন করা দেশ হলো ঘানা। দেশটিতে বর্তমানে ৩০% মুদ্রাস্ফীতি বিদ্যমান। দেশটি অলরেডি তাদের গ্রহীত ঋণের সুদের টাকা পরিশোধের জন্য তাদের অর্ধেকের বেশি রাজস্ব ব্যয় করে ফেলেছে।
মিশরঃ
আমরা সবাই জানি আফ্রিকা মহাদেশ তুলনামূলকভাবে একটু দরিদ্র অন্যান্য মহাদেশগুলোর তুলনায়। তাই এই তালিকায় আফ্রিকা
মহাদেশের দেশগুলোই বেশি। তাই মিশরও রয়েছে এই তালিকায়। এই
দেশটির বর্তমানে ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ রয়েছে যা
আগামী ৫ বছরের মধ্য
পরিশোধ করতে হবে। এই ঋণই বলে
দেয় যে অদূর ভবিষ্যতে
মিশরের কি পরণতি হবে।
কেনিয়াঃ
কেনিয়া হলো আফ্রিকা মহাদেশের অন্য আরেকটি দেশ। যেটি আফ্রিকা মহাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় একটি দেশ। এই দেশটি প্রতি
বছর তাদের রাজস্ব আয়ের প্রায় ৩০% ব্যয় করে থাকে ঋণ পরিশোধের জন্য।
বলা হয়ে থাকে,আগামী ২০২৪ সালে এই দেশটি সবচেয়ে
বড় ধরণের অর্থনৈতিক সংকটে ভুগতে পারে।
ইথিওপিয়াঃ
এই দেশটির অবস্থা আরো করুণ। আর এটিও হলো
আফ্রিকা মহাদেশের আরেকটি দেশ। বর্তমান দেশটিতে রিজার্ভ কারেন্সি রয়েছে ১ বিলিয়ন মার্কিন
ডলার যা খুবই হতাশাজনক।
সুতরাং এই দেশটিও শ্রীলঙ্কা
হওয়ার খুব কাছাকাছি চলে গিয়েছে।
পাকিস্তানঃ
বেলারুশঃ
বেলারুশ হলো ইউরোপের একটি দেশ এবং রাশিয়ার প্রতিবেশী রাষ্ট্র। গত মাসে রাশিয়াকে
ডিফল্টারের পরিণত করেছিল পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার কারণে । এই দেশটিরও
অবস্থা শোচনীয়।
ইকুয়েডরঃ
ইকুয়েডর হলো দক্ষিণ আমেরিকার অন্যতম সুন্দর একটি দেশ। এই দেশটিতেও বর্তমানে
অর্থনৈতিক সংকট চলছে। ধারণা করা হয়ে থাকে দেশটি যদি এমনভাবে চলতে থাকে তাহলে অতি দ্রুত দেশটিতে অর্থনৈতিক বিপর্যয় দেখা দিবে।
নাইজেরিয়া:
আপানকে যদি কেউ বলে যে আফ্রিকা মহাদেশে
অর্থনৈতিকভাবে সচ্ছল ৫টি দেশের নাম বলুন। তাহলে অবশ্যই নাইজেরিয়ার নাম রাখবেন। কিন্তু সেই নাইজেরিয়াও এখন ঋণের টাকায় জর্জরিত। যে ঋণ পরিশোধ
করা খুবই অসাধ্য ব্যাপার। তাই নাইজেরিয়াকেও এই তালিকায় রাখা
হয়েছে।
শেষকথাঃ
সবচেয়ে
বেশি ভালো লাগে যে আমাদের প্রিয়
সোনার বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে নেই কোনো ঝুঁকিতে। আলহামদুলিল্লাহ। আমাদের দেশ এখন স্বাবলম্বী।
Written By:Shahriar Tanzid Shaon
আমি শাহরিয়ার তানজিদ শাওন। আমি বর্তমানে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটে ২য় বর্ষে অধ্যয়নরত আছি। পড়াশোনার পাশাপাশি ব্লগে আর্টিকেল লিখতে ভালো লাগে। আলহামদুলিল্লাহ
কোন মন্তব্য নেই