যে ৮ টি অভ্যাস আপনার আত্মবিশ্বাস দ্বিগুন বাড়িয়ে দিবে।। 8 habits that will make you self-confidence।।
আত্মবিশ্বাস মানে নিজেকে এবং নিজের ক্ষমতা সম্পর্কে নিশ্চিত বোধ করা। আত্মবিশ্বাস হলো নিজের প্রতি আস্থা রাখা। অর্থাৎ আমি কাজ শুরু করার জন্য সাহস পাচ্ছিলাম না ঠিক তখনই আমার ভেতর থেকে বলে উঠলো আমি পারবো,আামকে পারতেই হবে। আর এটাই হলো একজন মানুষের আত্নবিশ্বাস। আপনি আত্নবিশ্বাসী থাকা মানে আপনি অন্য মানুষদের থেকে সম্মানিত ব্যাপারটা একদমই এমন নয়।
তো আজকের আর্টিকেলটি তাদের জন্যই যারা তাদের দৈনন্দিন বিভিন্ন কাজকর্মে আত্নবিশ্বাসী হতে পারেন না। তো আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে আমি এমন ৮টি অভ্যাস সম্পর্কে বলতে যাচ্ছি যেগুলো আপনাকে পূর্বের তুলনায় দ্বিগুণ আত্নবিশ্বাসী করে তুলবে। তবে হ্যা, আপনাকে অবশ্যই অভ্যাসগুলোকে আয়ত্ত করতে হবে। তাহলেই আপনি আত্নবিশ্বাসী হয়ে উঠবেন ইনশাআল্লাহ। তো চলুনজেনে নেওয়া যাক সেই ৮ টি অভ্যাস সম্পর্কে বিস্তারিতঃ
১। নিজেকে মূল্যায়ন করুনঃ
স্ব-মূল্যায়ন হল আপনি আপনার সাফল্যের বা লক্ষ্যে পৌছাতে কতটা অগ্রগতি করেছেন তা খুঁজে বের করার জন্য নিজেকে পরীক্ষা করার ক্ষমতা। আত্ন-মূল্যায়ন এমন একটি দক্ষতা যা কোনো ব্যক্তিকে তাদের নিজস্ব কাজ বা ক্ষমতা নিরীক্ষণ করতে, তাদের দুর্বলতা এবং শক্তিগুলি দিকগুলো কী তা খুঁজে বের করতে এবং প্রাসঙ্গিক সমস্যার সমাধানগুলি স্ব-নির্ণয় করতে সহায়তা করে। স্ব-মূল্যায়নের উদ্দেশ্য হল ব্যক্তিকে তার ক্ষমতার পরিমাণ জানতে সাহায্য করা এবং কর্মক্ষমতা মূল্যায়নকারীর প্রয়োজন ছাড়াই তাদের উন্নতি করা।
আর এটি যদি নিয়মিত আপনার অভ্যাসে পরিণত করতে পারেন তাহলে আপনার আত্মবিশ্বাস পূর্বের তুলনায় অনেক বেশি বৃদ্ধি পাবে এবং আপনি সকল কাজ খুব ভালোভাবে সম্পূর্ণ করতে পারবেন।
২। নতুন কিছু শিখুন বা শেখার ভেতরে থাকুনঃ
নতুন কিছু শেখার মাধ্যমে লোকেরা কেবল তাদের কর্মজীবনের সম্ভাবনাকে প্রসারিত করে না বরল তারা আরও অনেক কঠিন পরিস্থিতি মানিয়ে নিতে পারে।
কয়েক বছর আগে পর্যন্ত অ্যাকাউন্ট্যান্টরা তাদের কাজের জন্য মুদ্রিত লেজার ব্যবহার করত কিন্তু এখন অনলাইনে একটি সাধারণ এক্সেল কোর্স করার মাধ্যমে তারা তাদের কাজ করার জন্য অনেক বেশি কম্প্যাক্ট এবং সহজ পদ্ধতিতে অ্যাক্সেস পেয়েছে। যার প্রভাবে এখন আর তাদের লেজার ব্যবহার করতে হয়না। যদি এই দক্ষতা যদি তারা আয়ত্ব না করত তাহলে তারা অন্যদের থেকে অনেক বেশি পিছিয়ে পড়ত। সুতরাং আপনাকেও প্রতিনিয়ত নতুন কিছু শেখার মধ্য দিয়ে যেতে হবে এবং অন্যদের থেকে এগিয়ে যেতে হবে। আর নতুন কিছু শেখার ফলে আপনার ভেতরের আত্নবিশ্বাস অনেকগুন বেড়ে যাবে এবল সকল কাজে আপনি আত্নবিশ্বাসী হয়ে উঠতে পারবেন।
৩। আপনার ইচ্ছাশক্তি(Willpower)বাড়ানঃ
আসলে একজন মানুষের ভেতরের ইচ্ছাশক্তি তার সফলতার ক্ষেত্রে অনেক বেশি গুরুত্ব বহন করে থাকে। আপনি যদি কোনো লক্ষ্যে পৌঁছাতে চান তাহলে অবশ্যই ওই লক্ষ্য পূরণের জন্য আপনার প্রবল ইচ্ছাশক্তি থাকতে হবে। তাই প্রতিদিনের অভ্যাসে আপনি ইচ্ছাশক্তি বাড়ানোর জন্য জন্য কিছু না কিছু করুন। আর কোনো বিষয়ে ইচ্ছাশক্তি থাকলে আত্মবিশ্বাস আপনাআপনি তৈরি হয়।
৪। প্রতিদিন আপনার পজিটিভ দিকগুলো নিয়ে কথা বলুনঃ
আপনার সাথে পূর্বে ঘটে যাওয়া ভালো ব্যাপারগুলো নিয়ে প্রতিনিয়ত আলোচনা করুণ। অর্থাৎ যে বিষয়গুলো মনে হলে আপনার অনুপ্রেরণা বেড়ে যায়,যেকোনো কাজ করার জন্য আপনার আগ্রহ বা কাজের রিদম বেড়ে যায় সেগুলো নিয়ে প্রতিদিন নিয়ম করে ভাবুন। তাহলে আপনার আত্মবিশ্বাস অনেকটাই বেড়ে যাবে,কোনো ব্যাপার নিয়ে তেমন একটা হতাশা কাজ করবে না।
৫। নিজেকে সচেতন রাখুনঃ
যেকোনো বিষয়ে অনেক বেশি সচেতন বা সতর্ক থাকুন। নিজেকে আপ টু ডেট রাখুন। যেকোনো পরিস্থিতি যেন মোকাবেলা করতে পারেন এমনভাবে নিজেকে তৈরি করে রাখুন। আর আপনি নিজেকে সর্বদা সচেতন রাখলে আপনি তেমন কোনো সমস্যার সম্মুখীন হবেন না,হলেও খুব শীঘ্রই সমাধান করে ফেলতে পারবেন। আর সচেতনতা অবশ্যই আত্মবিশ্বাসের সাথে সম্পৃক্ত। তাই নিজেকে সচেতন রাখুন এবং আত্নবিশ্বাসী থাকুন সর্বদা।
৬। Be Positive থাকুন সর্বদাঃ
আমাদের সমাজে এখন একটি ট্রেন্ড তৈরি হয়ে গিয়েছে যেকোনো ব্যাপারকেই নেগেটিভ ভাবে দেখা(হোক সেটা ভালো কিংবা মন্দ) । কিন্তু এই নেগেটিভিটি খুবই খারাপ একটা ব্যাপার। এটি আপনার আত্মবিশ্বাসকে ০% এ নামিয়ে নিয় আসে। তাই আপনি অলওয়েজ positivism থাকুন আপনার দৈনন্দিন জীবনে না হয় এখন থেকেই positive থাকার চর্চা করুন।
৭। দূর্বলতাগুলোকে জানুনঃ
আমাদের প্রত্যেকটি মানুষের ভেতরেই যেমন ইতিবাচক এবং নেতিবাচক দিক রয়েছে ঠিক একইভাবে আমাদের ভেতরে দূর্বলতা এবং সক্ষমতা দুইটাই বিদ্যমান। আর যেসকল ব্যক্তিরা আত্নবিশ্বাসী তারা অবশ্যই তাদের দূর্বল পয়েন্টগুলো নিয়ে সচেতন। তারা তাদের দূর্বল পয়েন্টগুলোকে লুকিয়ে রাখা,খারাপবোধ করা বা অস্বীকার করে না। এই লোকগুলো সর্বদা তাদের দূর্বল পয়েন্টগুলো নিয়ে কাজ করে এবং সেগুলো কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করে।
সো আপনিও আজকে থেকে অভ্যাস করে নিন যে আপনার দূর্বলতাই আপনার শক্তি,তাহলেই অনেক বেশি দৃঢ় প্রত্যয়ী এবং আত্নবিশ্বাসী মানুষ তৈরি করতে পারবেন নিজেকে।
৮। পাছে লোকে কিছু বলে এগুলা নিয়ে কম ভাবুনঃ
অত্যন্ত আত্নবিশ্বাসী মানুষরা পাছে লোকে কিছু বলে এমন টাইপ সিলি বিষয় নিয়ে মাথা ঘামায় না। তারা সর্বদা সামনের দিকে অগ্রসর, তাদের পিছে ফিরে তাকানোর সময়ই নেই। তাই আপনিও আজকে থেকে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ হোন যে আর কোনোদিনও অন্যের ব্যাপার বা অন্যের বলা কথা নিয়ে মাথা ঘামাবো না। আমি আমার মতো সামনের দিকে এগিয়ে যাবো ইনশাল্লাহ।
শেষ কথাঃ
আত্নবিশ্বাসী মানে আপনি কি করতে সক্ষম তা দেখানো নয় বরং স্ব-নিশ্চিতবোধ করাই হলো লক্ষ্য। আত্নবিশ্বাসী ব্যক্তিদের একটি স্পষ্ট জ্ঞান রয়েছে যে তারা জীবনের সমস্যাগুলি পরিচালনা করতে পারে এবং তারা কিছু ক্ষমতায়নের অভ্যাস গড়ে তোলার মাধ্যমে নিজেদের উপর এই উপলব্ধি অর্জন করে।
ইতিবাচক অভ্যাসের নিয়মিত অনুশীলনের সাথে নিজের সম্পর্কে এই উপলব্ধিই তাদের পথে আসা অসুবিধা বা বাধাগুলি মোকাবেলা করার অভ্যন্তরীণ শক্তি সরবরাহ করে। আত্মবিশ্বাস হল অত্যন্ত সফল ব্যক্তিদের বৈশিষ্ট্য যা তাদেরকে বৃহত্তর চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে, সুযোগ গ্রহণ করতে, নতুন লোকেদের কাছে পৌঁছাতে এবং তাদের প্রকৃত সম্ভাবনা প্রকাশ করতে সজ্জিত করে। যে কেউ আত্মবিশ্বাসী, আত্মনিশ্চিত বোধ করতে এবং তাদের লক্ষ্য অর্জনের জন্য নিজেকে স্থির করতে পারে। আত্মবিশ্বাস হল একটি শেখার যোগ্য দক্ষতা। আপনার শুধু প্রয়োজন একটি ইচ্ছুক হৃদয় এবং একটি দৃঢ় মন।
তো এই আর্টিকেলে আলোচিত ৮টি অভ্যাস যদি আপনি আপনার দৈনন্দিন জীবনে নিয়মিত চর্চা করতে পারেন তাহলে ইনশাআল্লাহ আপনার আর কখনোই আত্নবিশ্বাসে ঘাটতি দেখা দিবে না। ধন্যবাদ।
Written By:Shahriar Tanzid Shaon
![]() |
SHAON |
কোন মন্তব্য নেই