শিশুর প্রারম্ভিক শৈশব || What is early childhood?


শিশুর প্রারম্ভিক শৈশব বলতে বোঝায় শিশুর ২- ৬ বছর পর্যন্ত সময়কালকে। এই সময়ে শিশুদের শরীরে বিভিন্ন ধরণের বিকাশ এবং বৃদ্ধি সংগঠিত হয়ে থাকে। তো আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আমর জানবো একটি শিশুর প্রারম্ভিক শৈশব কি? এই সময়ে শিশুর কি কি বিকাশ ঘটে? শিশুদের কিভাবে যত্ন নিতে হবে এগুলো সম্পর্কে।  

Posted on: 22 october,2022/By Shahriar Tanzid Shaon


 
Early Childhood

সূচিপত্রঃ

১| প্রারম্ভিক শৈশব কি?

২|  শারীরিক বিকাশ

৩|  মানসিক বিকাশ

৪| ভাষাগত বিকাশ

৫| প্রাক্ষেভিক বিকাশ

৬| সামাজিক বিকাশ

৭| নৈতিক বিকাশ

৮| Behavioural Pattern of this period.

৯| Parents role dealing  with the children of this period.


প্রারম্ভিক শৈশব কি? 

শিশুর প্রারম্ভিক শৈশব বলতে বোঝায় শিশুর ২- ৬ বছর পর্যন্ত সময়কালকে। এই সময়ে শিশুদের শরীরে বিভিন্ন ধরণের বিকাশ এবং বৃদ্ধি সংগঠিত হয়ে থাকে।

 

শারীরিক বিকাশ

দুই বছরের মধ্যে শিশুর ওজন চারগুণ মানে ১২ কেজি হয়। পাঁচ বছরে তা বেড়ে 13 পাউন্ড এর কাছাকাছি হয়।

উচ্চতাগত পরিবর্তন - তিন থেকে পাঁচ বছরে শিশুদের উচ্চতা স্বাভাবিকভাবে প্রায় 38 ইঞ্চি থেকে 43 ইঞ্চি বেড়ে যায়।

মাংসপেশি বৃদ্ধি ও বছরে নিজের ভারসাম্য বজায় রেখে দৌড়াতে পারে।

অন্যান্য ক্রিয়া শিশুর দুই থেকে পাঁচ বছর পর্যন্ত শিশু হাঁটতে, দ্রুত হাঁটতে, দ্রুত দৌড়াতে পারো লাফিয়ে বল ধরতে, শিশুর পায়ের সঞ্চালন করে খেলনা গাড়ি চালাতে পারে বা ট্রাই সাইকেল চালাতে পারে।

 

Related: জন্ম-পরবর্তী বিকাশ || Post-natal Development ||

 

মানসিক বিকাশ

Paiget-র মতে, এই ভরের বিকাশমূলক দিক গুলি হল:

(২-৫ বছর)  এই স্তরে শিশুরা কোন কিছু পর্যবেক্ষণ করে কিছু সময় পরে সেটিকে অনুকরণ করে।

কল্পনাছলে খেলা: এই স্তরে শিশুরা সারাদিনের কার্যকলাপকে কল্পনা করে এবং খেলাচ্ছলে সেটিকে অভিনয় করে। একে বলে কল্পনাছলে খেলা।

ভাষা বিকাশ

২-৩ বছর বয়সে শিশুর ভাষাগত বিকাশ দ্রুততার সঙ্গে সম্পন্ন হয়। শিশুর শব্দভাণ্ডার বাড়তে থাকে এবং অতীতকাল সম্বন্ধীয় বাক্য ব্যবহার করতে সক্ষম হয়।

৩-৪ বছর বয়সে শিশু তিন-চারটি শব্দাংশের সমন্বয় যুক্ত শব্দ বা যুক্ত বাক্য তৈরি করতে পারে, প্রশ্নসূচক বাক্য এবং বাক্য প্রায়োগিক দিকের ধারনা গঠন করতে পারে।

প্রাক্ষোভিক বিকাশ

২-৫ বছর বয়সে শিশুর মধ্যে পূর্ণবয়স্ক ব্যক্তিদের মতো প্রায় সব ধরনের প্রক্ষোভের সৃষ্টি হয় কিন্তু সেগুলিকে নিয়ন্ত্রণ করার সক্ষমতা তৈরি হয় না।

সামাজিক বিকাশ

এরিকসনের মতানুসারে;

৩ - ৬ বছরের বয়সের শিশুর মধ্যে সামাজিক প্রেক্ষাপটের উৎসাহ ও অপরাধবোধের দ্বন্দ্ব দেখা যায়। এই স্তরে শিশুরা উৎসাহিত হয়ে কাজ শুরু করে এবং সঠিকভাবে সাফল্য পেলে তাদের উৎসাহ বেড়ে যায়। অন্যদিকে যথাযথভাবে কাজ শুরু বা শেষ করতে না পারলে তারা অপরাধবোধে ভোগে এবং সামাজিক দক্ষতা অর্জিত হয় না।

দুবছর বয়স থেকেই সত্যিকারের সমাজচেতনা দেখা যায়। এই সময় থেকেই শিশুদের মধ্যে সহযািেগতা এবং সহানুভূতির গুণগুলি বিকশিত হয়।

নৈতিক বিকাশ

নৈতিক বিকাশ ঘটে।

Behavioural Pattern of this Period

শৈশবের চাহিদা

শৈশবে বিকাশগত বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী কতকগুলি গুরুত্বপূর্ণ চাহিদা পরিলক্ষিত হয়। শৈশবের চাহিদাগুলিকে নিম্নলিখিত তিনটি শ্রেণিতে ভাগ করা যায়

(১) দৈহিক চাহিদা: 

দৈহিক চাহিদা বলতে এমন কতকগুলি জৈবিক চাহিদাকে বাদে ঝায় যা শিশুকে বেঁচে থাকতে সাহায্য করে। এই চাহিদাগুলি হল:
খাদ্যের চাহিদা: শৈশবে দৈহিক বৃদ্ধি খুব দ্রুত হারে হয়ে থাকে। এই জন্য শিশুর খাদ্যের চাহিদা অত্যন্ত প্রবল হয়ে ওঠে।
ঘুমের চাহিদা:শিশুর ঘুমের চাহিদাও এই বয়সে প্রবল হয়। দ্রুত বৃদ্ধির জন্যই অতিরিক্ত ঘুমের চাহিদা দেখা যায়।

নিরাপত্তার চাহিদা: শিশু পিতামাতা বা বয়স্কদের কাছ থেকে দৈহিক নিরাপত্তা চায়। নিরাপদ আশ্রয়, খাদ্য, বস্ত্র, জল, বায়ু প্রভৃতি শিশুর দৈহিক নিরাপত্তামূলক চাহিদার উদাহরণ।

সক্রিয়তার চাহিদা: কোনা শিশুই চুপ করে থাকতে চায় না। সবসময় সে কিছু না কিছু করতে চায়। তার ইচ্ছামত চলাফেরা, নড়াচড়া ও দৌড়াদৌড়িতে বাধা দিলে সে বিরক্ত হয়।
পুনরাবৃত্তির চাহিদা: শিশুর মধ্যে পুনরাবৃত্তির চাহিদা লক্ষ করা যায়। একই কথা সে বারবার বলে, একই কাজ সে বারবার করতে চায়।

 


(২) মানসিক চাহিদা:

 শৈশবে শিশুর দৈহিক চাহিদার সঙ্গে সঙ্গে কতকগুলি মানসিক চাহিদা দেখা দেয়। এই চাহিদাগুলি হল:

আয়ত্তে আনার চাহিদা: শিশু সবকিছুকে নিজের আয়ত্তে আনতে চায়। শিশু যা দেখে ভাই নিতে চায় ও পেতে চায়। নিজের জিনিস সে অন্যকে দিতে চায় না।
জানার চাহিদা:  শিশুর মধ্যে সবকিছু জানার চাহিদা দেখা দেয়। কী, কেনএইসব প্রশ্নের উত্তর সে চায়। এই চাহিদার ফলে অনেক সময় সে কোন জিনিসকে ভেঙে তার ভেতরে কী আছে তা দেখতে চায়। 
কল্পনার চাহিদা: শিশু কল্পনাপ্রবণ সে গল্প শুনে কল্পনায় রূপকথার রাজ্যে বিচরণ করে আনন্দ পায়।

(৩) সামাজিক চাহিদা:

শিশু জন্মায় সামাজিক পরিবেশে। সামাজিক পরিবেশের মধ্যেই তার বিকাশ ঘটে। তাই তার মধ্যে কতকগুলি সামাজিক চাহিদা পরিলক্ষিত হয়। এই চাহিদাগুলি হল:

দলবদ্ধ হওয়ার চাহিদা: কোনা শিশুই একা থাকতে চায় না। সে তার বন্ধুদের সঙ্গে দল বেঁধে থাকাটাই পছন্দ করে।
সমবেদনার চাহিদা: শিশু কোনাতে কারণে শরীরে বাধা পেলে পিতামাতা ও অন্য বয়স্কদের কাছ থেকে সমবেদনা প্রত্যাশা করে।
প্রতিদ্বন্দ্বিতার চাহিদা: শিশুরা তাদের অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছানার জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতায় লি হয়।
সহযািেগতার চাহিদা:  শিশুরা বড়দের কাছ থেকে সব কাজে সহযাগিতা পেতে চায়। এই চাহিদাপূরণের জন্য বিভিন্ন আচরণের মাধ্যমে তারা বড়দের দৃষ্টি আকর্ষণ করে।

শৈশবের উপরিউক্ত চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে শৈশবের শিক্ষাব্যবস্থা রচনা করা প্রয়াজেন।

 

 

Parent's Role in dealing with the children of this period

বেশিরভাগ অভিভাবকই শিশুর যত্ন ও প্রতিপালন বিষয়ে জানেন না। প্রারম্ভিক শৈশব হচ্ছে সেই সময়টা যখন শিশুর যত্ন ও বেড়ে ওঠার বিষয়ে সবচেয়ে বেশি খেয়াল করা প্রয়োজন। শিশুর জন্মের পর প্রথম আট বছর তার বেড়ে ওঠার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সময়কাল। এটি সময়টি পরিবর্তনের এবং সে পরিবর্তন শারীরিক ও মানসিক উভয় ধরনের। তবে শিশুর প্রথম তিন বছর বৃদ্ধি ও বিকাশের জন্য সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ।

এ সময়ে শিশুর মস্তিষ্ক নমনীয় থাকে এবং দ্রুত বিকশিত হয়। শিশুর ভালো ও খারাপ অভিজ্ঞতাগুলো মস্তিষ্কের বৃদ্ধির ওপর কড়া প্রভাব ফেলে। এই সময়ে অবহেলা বা নির্যাতন শিশুর বুদ্ধিবৃত্তি, আচরণ ও আবেগের ক্ষেত্রে জটিলতা সৃষ্টি করে। শিশুর বিকাশের জন্য অত্যাবশ্যক উপাদান- পুষ্টি উদ্দীপনা, সুরক্ষা ও শিক্ষা এই বিষয়গুলো নিশ্চিত করার লক্ষ্যে শিশু বাবা-মা ও সেবাদাতাদের সক্ষম করে তোলার সম্ভাব্য সবকিছু নিয়ে কর্মসূচি প্রণয়ন করা হয়। সে কাজ সমূহকে বলা হয় প্রারম্ভিক শৈশব সেবা বা আর্লি চাইল্ডহুড কেয়ার অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অথবা 'ইসিসিডি।

বাংলাদেশে অধিকাংশ অভিভাবকের শিশুর সঠিক যত্ন ও প্রতিপালন সম্পর্কে জ্ঞান এখনও বেশ সীমিত। বাবা-মা কাজে থাকার সময় ছোট শিশুরা যথাযথ সেবা থেকে বঞ্চিত হয়।বাংলাদেশে আধকাংশ আভভাবকের শিশুর সাঠক যত্ন ও প্রতিপালন সম্পর্কে জ্ঞান এখনও বেশ সীমিত। বাবা-মা কাজে থাকার সময় ছোট শিশুরা যথাযথ সেবা থেকে বঞ্চিত হয়।শিশুর শিক্ষাগত সাফল্যের জন্য অভিভাবকরা খুব বেশি যত্নশীল হলেও অধিকাংশই জানেন না যে, উদ্দীপনা ও নিরাপত্তার অভাব শিশুর শ্রেণিকক্ষের কর্মকাণ্ডে ব্যাপকভাবে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।

বাংলাদেশে শিশুর প্রাথমিক বিকাশের চ্যালেঞ্জগুলো সহিংস আচরণ, জ্ঞানের সীমিত সুযোগ এবং মৌলিক সেবাগুলোর ঘাটতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। প্রতি চারটি শিশুর মধ্যে তিনটি শিশু মানসিক নির্যাতনের এবং প্রতি তিনটি শিশুর মধ্যে দুটি শারীরিক শান্তি ভোগ করেছে।বস্তি, প্রত্যন্ত গ্রামীণ অঞ্চল এবং সুবিধাবঞ্চিত সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর শিশু, যাদের মৌলিক সেবা পাওয়ার সুযোগ সীমিত, তারাই বেশি ঝুঁকিতে থাকে।

 

Courtesy 

Information Collected From: Akter Banu Alpona (Mam) lecture.



 

 

Collected By:Shahriar Tanzid Shaon

SHAON
আমি শাহরিয়ার তানজিদ শাওন। আমি বর্তমানে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটে ২য় বর্ষে অধ্যয়নরত আছি। পড়াশোনার পাশাপাশি ব্লগে আর্টিকেল লিখতে ভালো লাগে। আলহামদুলিল্লাহ🥰🌺

 

কোন মন্তব্য নেই

Blogger থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.