একটি শিশুর জন্ম-পূর্ববর্তী বিকাশ তখনই শুরু হয় যখন একটি শিশু মাতৃগর্ভে আসে। অর্থাৎ একটি শিশু পৃথিবীতে আসার পূর্বে তার ভেতরে যেসকল বিকাশসমূহ সম্পন্ন হয়,সেগুলোই একটি শিশুর জন্ম-পরবর্তী বিকাশ। তাই এই আর্টিকেলে আলোচনা করবো শিশুর জন্ম-পরবর্তী বিকাশ কি? কোনসকল বিকাশসমূহ সংগঠিত হয়?
বাচ্চা যখন মাতৃগর্ভে থাকে তখন তার বিকাশ কিসের উপর নির্ভর করে ?
⇨২ ধরনের Factors এর উপর-
1. Chromosomal
2.Environmental
☆Chromosomal Factor- বিকাশকে প্রভাবিত করে :
1. Down syndrome or Mongolism
2. Hemophilia
3. Phe Phenylketonuria
4. RH Factors
5. একধিক
6. এক্সরে ও অষুধের প্রভাব
☆ Environmental Factor যেভাবে মায়ের গর্ভে শিশুর বিকাশকে প্রভাবিত করে
১. মায়ের পুষ্টি
২. মায়ের স্বাস্থ্য
৩. টেরোটোজেনের প্রভাব
৪. ভাইরাস সংক্রমন
৫. গর্ভবতী মায়ের যত্ন
★Chromosomal Factors :
১. Down Syndrome Ore Mongolism -
এটা একটা বিশেষধরণের Developmental Disorders একটা বাচ্চার দেহে জায়গোটে সাধারণত ২৩ জোড়া অর্থাৎ ৪৬টি ক্রোমোজোম থাকে। কোনো কারণে যদি বাচ্চার দেহে ৪৭ টি ক্রোমোজোম থাকে তাহলে সেটাকে বলা হয় Down Syndrome. এক জোড়া ক্রোমোজোম বেশি থাকার ফলে যে অস্বাভাবিকতা দেখা সেটাকে বলা হয় Down Syndrome.
১৮৬৬ সালে ব্রিটিশ চিকিৎসক ল্যাগনে ডাউনের নাম অনুসারে এর নামকরণ করা হয় Down Syndrome.
এর ফলে যে সকল লক্ষণ সমূহ দেখা যায় তা হল-
১. এ সকল বাচ্চাদের মানসিক বৃদ্ধি কম হয় । বুদ্ধি করা হয়।
২. চেহারা গোলগাল হয়, অপরিনত, মুখ ফোলা, গাল ফোলা।
৩. জিহ্বা দিয়ে সবসময় লালা পরতে থাকে।
৪. হাত ও পা আকৃতিতে ছোট হয় ।
৫. হৃৎপিন্ডের অবস্থা স্বাভাবিক থাকে না।
৬. এরা সাধারণত ১০ থেকে ১৫ বছরের কম বাঁচে।
Related: যোগাযোগ বৈকল্য | যোগাযোগ বৈকল্যের লক্ষণসমূহ এবং কারণসমূহ |
☆Down Syndrome কেন হয় ?
→ এর কারণ হিসেবে Langdon Down উল্লেখ করেছেন,
যদি মায়ের বয়স বেশি হয় তাহলে অস্বাভাবিক ভ্রুন তৈরি হতে পারে এবং তার ফলে বাচ্চাদের এ ধরনের Syndome দেখা দিতে পারে। মায়ের বয়স ৩০ এর কম হলে প্রতি ১৫০০ জনে ১ টা বাচ্চা আর মায়ের বয়স ৩০ এর বেশি হলে ৮০ জনে ১ জন আর মায়ের বয়স ৪৮+ হলে ৪০ জনে ১জনের এমন হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
২. Hemophilia -
Sex ক্রোমোজোমে ত্রুটি থাকলে বাচ্চাদের Hemophilia হতে পারে। এ ধরনের সমস্যা থাকলে বাচ্চাদের ক্ষত হলে সেখানে রক্তক্ষরণ সহজে বন্ধ হয় না। এমনকি রক্তক্ষরণে বাচ্চারা মারাও যেতে পারে।
৩. Phenylketonuria -
এটা এক ধরনের জন্মগত ত্রুটি। অ্যামাইনো এসিডের প্রভাবে বাচ্চার বিকাশ অসম্পন্ন হয় আর তাকে Phenylketonuria বলে। এদের স্নায়বিক পেশি অস্বাভাবিক হয়। এর ফলে মানসিক প্রতিবন্ধী হতে পারে। এদের খাদ্য তালিকা মেনে চলতে হয়, না হলে এ রোগ আরও বাড়তে পারে । তার সন্তান হলে তারও এটা হতে পারে ।
৪. RH Factore-
এটা রক্তের বিশেষ একধরণের প্রেটিন উপাদান। বাবা যদি RH(+) হয় আর মা যদি RH(-) হয় তাহলে তাদের ১ম সন্তান সাভাবিক হলেও ২য় সন্তানের বেলায় গর্ভকালীন নানা রকম জটিলতা দেখা দেয়।
৫. একাধিক ভ্রুন-
মায়ের গর্ভে একটা ভ্রূণের মধ্যে দুইটা বাচ্চা জন্ম নিলে বাচ্চার মধ্যে অস্বাভাবিকতা দেখা দিতে পারে। জয়েন্ট বেবি ভ্রূণের অস্বাভাবিকতার কারণে বিকাশ জনিত সমস্যা হতে পারে। এছাড়া মায়ের পেটে একই সাথে একাধিক বাচ্চা থাকলে তাদের মধ্যে সবকিছূই ভাগাভাগি হয়ে যায়। পরবর্তীতে দেখা যায় তাদের মধ্যে একটা বাচ্চা একটু স্বাস্হ্যবান অন্যটা রুগ্ন।
৬. এক্সরে ও ঔষধের প্রভাব-
গর্বে বাচ্চা- থাকাকালীন সময়ে এক্সরের ফলে বাচ্চার ভিতর সেই এক্সরে রশ্মির প্রভার পরতে পারে। এছাড়া বাচ্চা গর্ভে থাকার সময় মা যেসকল ঔষধ খায় তার প্রভাবও পরতে পারে বাচ্চার উপর।
মা গর্ভাবস্থায় কি খায়, পুষ্টিকর, অপুষ্টিকর এইসবের উপর বাচ্চার অস্বাভাবিক বা স্বাভাবিক হওয়া নির্ভর করে। মা অপুষ্টিতে ভুগলে গর্ভপাত হতে পারে অথবা অপুষ্ট-অপরিণত বাচ্চা জন্ম নিতে পারে। জন্মের পর বাচ্চা রক্তশূন্যতায় ভূগতে পারে, বুদ্ধির বিকাশে সমস্যা হতে পারে ।
২.মায়ের স্বাস্থ্য :
মায়ের ডায়বেটিকস, হার্টের সমস্যা, রক্ত স্বল্পতা, দেহে পানি পরিমান কম থাকা ইত্যাদির উপর বাচ্চার শারীরিক ও মানসিক স্বাস্হ্য নির্ভর করে । মায়ের অক্সিজেন স্বল্পতা হলে বাচ্চার ৫০% পর্যন্ত বুদ্ধি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
৩. টেরোটোজেনের প্রভাব:
টেরোটোজেন হচ্ছে একধরণের রাসায়নিক উপাদান। এই রাসায়নিক উপাদান কখনো কখনো জীবাণু হতে পারে ফলে বাচ্চার ক্রোমোজোমের সমস্যা এবং ভ্রূণের সে বৃদ্ধি সেটা ত্রুটিপূর্ণ হতে পারে। অক্সিজেন সরবরাহ বিঘ্নিত হতে পারে। যার ফলে বাচ্চার বিপাক/হজমে সমস্যা হতে পারে।
৪.ভাইরাস সংক্রমন:
জন্মের ১ম তিন মাসে বাচ্চাদের রুবেলা ভাইরাসের সংক্রমন হতে পারে ।যদি হয় তাহলে, বাচ্চা বধির, পঙ্গু এমনকি মারাও যেতে পারে। আর সিফিলিস,গনরিয়া এধরনের যৌন রোগ বাচ্চার
মায়ের থাকলে পরবর্তীতে বাচ্চার নানান ধরনের সমস্যা হতে পারে।
গর্ভবতী অবস্থায় মায়ের পর্যাপ্ত বিশ্রাম দরকার। ভারী কাজ না করা, পর্যাপ্ত পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ, মাদক থেকে দুরে থাকা, দুঃচিন্তা মুক্ত থাকা, সর্বদা হাসিখুশি থাকা, পেটে আঘাত না লাগতে দেওয়া, বিভিন্ন দরকারি টিকা নেওয়া। এসবে ব্যতিক্রম ঘটলে বাচ্চার বিভিন্ন সমস্যা হতে পারে।
Courtesy
Information Collect From: Akter Banu Alpona (Mam) lecture.
Collected by: জুবায়ের রশীদ তামিম
 |
Tamim |
Zubayer Rashid Tamim ॥ University of Rajshahi ॥ IER (2019-20)॥ Special Stream॥ Hometown: Sirajganj
কোন মন্তব্য নেই